Agaminews
Dr. Neem Hakim

বন্ধের মুখে ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, গভীর ঝুঁকিতে আরও ১৩


Ekattor News প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন /
বন্ধের মুখে ৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান, গভীর ঝুঁকিতে আরও ১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশের নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) খাতে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) এই খাতে খেলাপি ঋণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা বেড়েছে, যার ফলে মোট খেলাপি ঋণ সাড়ে ২৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ খাতের ২০টি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের হার এখন ৫০ থেকে ৯৯ শতাংশের মধ্যে, যা কার্যত তাদের দেউলিয়া অবস্থায় নিয়ে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের আমানত ফেরত দিতে পারছে না এবং নতুন ঋণ বিতরণও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্রমতে, উচ্চ খেলাপি ঋণ এবং গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ায় গত মাসে ২০টি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এদের মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের দেওয়া ঘুরে দাঁড়ানোর কর্মপরিকল্পনা সন্তোষজনক না হওয়ায় সেগুলোকে বন্ধ করার চূড়ান্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও এই সিদ্ধান্তে সায় এসেছে।

বন্ধ হতে যাওয়া ৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে—এফএএস ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি), পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, আভিভা ফাইন্যান্স, প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স এবং প্রাইম ফাইন্যান্স। এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের হার ৮০ থেকে ৯৯ শতাংশের মধ্যে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মো. শাহরিয়ার সিদ্দিকী জানিয়েছেন, আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আশ্বস্ত করেন যে, সরকার থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ পাওয়ার পর এই প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং আমানতকারীদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

এই ৯টি ছাড়াও আরও ১৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, যাদের খেলাপি ঋণ ৫০ শতাংশের বেশি। ঝুঁকিতে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—সিভিসি ফাইন্যান্স, বে লিজিং, ইসলামিক ফাইন্যান্স, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স, হজ ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, আইআইডিএফসি, উত্তরা ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্স।

বর্তমানে দেশের নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে বিতরণকৃত মোট ঋণের প্রায় ৩৬ শতাংশই খেলাপি। এই ভয়াবহ চিত্র আর্থিক খাতের ভঙ্গুর দশাকেই প্রতিফলিত করে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংকট মোকাবিলা করা না গেলে পুরো আর্থিক খাতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা সাধারণ বিনিয়োগকারী এবং আমানতকারীদের জন্য বড় ঝুঁকির কারণ হতে পারে।