Agaminews
Dr. Neem Hakim

সিরাজগঞ্জে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত যমুনা, ফুরজোড় ও চলনবিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে


Ekattor News প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৬, ২০২৫, ২:২৪ অপরাহ্ন /
সিরাজগঞ্জে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত যমুনা, ফুরজোড় ও চলনবিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে

একাত্তর নিউজ ডেস্ক:
শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতি বছরের মত এবারও সিরাজগঞ্জের যমুনা, ফুরজোড় ও চলনবিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে অতিখি পাখির আগমন ঘটেছে। অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে জলাশয় গুলি । শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আসছে অতিথি পাখির দল, যার কিছু আসছে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলেও।
পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ আর অবাধ বিচরণ বিমোহিত করছে এলাকাবাসী ও দর্শনার্থীদের। কিন্তু শিকারির থাবা প্রতিনিয়ত এ কলকাকলি থামিয়ে দিতে সক্রিয়। ইতোমধ্যে তাড়াশের মথুরা দিঘীতে বিভিন্ন জাতের অতিথি পাখি এসেছে।
এছাড়া, বেশ কিছু বিপন্ন প্রায় ও বিরল প্রজাতির দেশিয় পাখি বছর জুড়েই এ মথুরা দিঘীতে অবস্থান নেয়। দেশীয় প্রজাতির এসব পাখির জন্য এখন এলাকা নিরাপদ আবাস হিসেবেই চিহ্নিত। এখন পর্যন্ত মথুরা দিঘীতে অবস্থান নেওয়া অতিথি পাখির মধ্যে বেশি দেখা গিয়েছে বড় পানকৌড়ি, পাতি-কুট, গিয়িরা হাঁস, তিলা হাঁস প্রভৃতি।
জানা যায়, প্রচন্ড শীতের প্রকোপ থেকে আত্মরক্ষার্থে সুদূর হিমালয়, সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান অঞ্চল থেকে অতিথি পাখিরা এ অঞ্চলে আসে। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে বালি হাঁস, জলপিপি, কোম্বডাক, সরালী কাস্তে চাড়া, পাতাড়ি হাঁস, কাদা খোচা, ডংকুর, হুরহুর, খয়রা, সোনা রিজিয়া অন্যতম। শিকারিদের নির্বিচারে পাখি শিকারের ফলে অতিথি পাখি আসা অনেকটাই কমে গেছে । প্রশাসন তৎপর হলে এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ হলে এসব পাখি শিকার বন্ধ হবে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন।
এলাকা বাসীসূতে জানান,নভেম্বরের শেষ থেকেই অপরূপ সুন্দর এ মথুরা দিঘীতে আসতে শুরু করে অতিথি পাখির ঝাঁক। প্রতিদিন বিচিত্র রঙের অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয় মথুরা দিঘীটি। অপরূপ সুন্দর এ মথুরা দিঘীতে আসতে শুরু করে অতিথি পাখির ঝাঁক। প্রতিদিন বিচিত্র রঙের অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত হয় মথুরা দিঘীটি।
নওগাঁ গ্রামের আবু সাইদ জানান, দেশের পাখির মধ্যে বালি হাঁস, পাতি সরালি, বেগুনি কালিমসহ বিভিন্ন প্রজাতির হাঁস বিভিন্ন এলাকা থেকে মথুরা দিঘীতে আসছে। পাখিগুলো মথুরা দিঘীর চারপাশে কচুরিপানার মধ্যে অবস্থান করছে। তিনি আরো জানান, দিনরাত পাখিদের কিচিরমিচির আর কলতানে মুখরিত মথুরা দিঘীর দৃশ্য দেখে পাখিপ্রেমিদের মন সহজেই জুড়িয়ে যাবে।
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) -এর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও জীববৈচিত্র্য ও প্রকৃতি সংরক্ষণে স্বেচ্ছায় নিয়োজিত সংগঠন স্বাধীনজীবন-এর নির্বাহী পরিচালকমোঃ আব্দুর রাজ্জাক নাছিম বলেন, শীতের কষ্ট থেকে বাঁচতে সাময়িক সময়ের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতি বছরের মত এবারও অতিথি পাখির আগমন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। সিরাজগঞ্জের যমুনা নদী, রায়গঞ্জের ফুলজোড় (বাঙালী)নদী,তাড়াশের চলনবিল সহ অন্যানো জলাশয়ে বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য এই অতিথি পাখির আগমন আমাদের আর্শীবাদ স্বরূপ এই জন্য, তারা অপকারী পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ খেয়ে আমাদের উপকার করে,তাদের বিষ্ঠা ভূমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে। এ ছাড়াও এরা প্রকৃতির অলংকার!প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় তাদের অবদান অনন্য। কিন্তু অনেক অমানবিক, অসাধু, শিকারী এই সব অতিথি পাখি অবৈধভাবে বিষটোপ,ফাঁদ, ইয়ারগান, কারেন্ট জাল সহ বিভিন্ন রকমের জাল দিয়ে অবাধে শিকার করছে,এতে বিপন্ন হচ্ছে প্রকৃতি। পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ সত্ত্বেও প্রশাসনের তেমন ভূমিকা লক্ষনীয় নয়! আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তৎপর হলে পাখি শিকার অবশ্যই বন্ধ করা সম্ভব। পাখি শিকার রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, অতিথি পাখি শিকার বন্ধের জন্য স্থানীয় প্রশাসনে পক্ষথেকে সচেতনতা প্রচারণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিল ও পুকুর গুলোতেও অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে বলেও জানান তিনি। সময় স্থানীয়রা তথ্য দিয়ে সহায়তা করলে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

সাংস্কৃতিক বিভাগের আরো খবর

আরও খবর