স্বল্প সময়ে সরকারের পরিবর্তন বিএনপির দিবাস্বপ্ন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সরকারের পরিবর্তন চাইলে আরেকটি নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই। আজ শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা এখন আরাম-আয়েশে ছুটি কাটাচ্ছেন। ক্ষমতা সন্নিকটে এমন আশা যে কর্মীদের দিয়েছিল, সারা দেশের সে কর্মীরা হতাশ। বিএনপি নেতারা আন্দোলন করবে সে অবস্থা নেই। বিএনপি এখন আন্দোলন করার সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ক্ষমতা পরিবর্তন নিয়ে বিএনপি নেতারা এর আগেও অনেক কথা বলেছেন। এখনো মাঝে মাঝে বলেন। ক্ষমতা এত কাছে! এটা তো দিবাস্বপ্ন। যারা দিবাস্বপ্ন দেখে, তাদের দেখাটা স্বাভাবিক।জনগণ বিএনপির সঙ্গে নেই। জনগণ আন্দোলনে নেই। জনগণ শেখ হাসিনার ওপর খুশি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থাশীল এবং তার সততা, পরিশ্রম, নেতৃত্ব এ দেশের মানুষ মেনে নিয়েছে। ৭৫-পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার চেয়ে যোগ্য, সৎ, পরিশ্রমী ও দক্ষ নেতৃত্বের জন্ম হয়নি।বাংলাদেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার বিকল্প এখনো নেই।
এ সময় বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার এখানে সক্রিয় আছে, নিষ্ক্রিয় নেই। কাজ তো করে যাচ্ছি, একসময় ফল আসবে। কাজে, আন্তরিকতায়, চেষ্টার কোনো কমতি নেই-তাহলে ফল আসবে না কেন?
মন্ত্রী বলেন, বাজার পরিস্থিতি বিশ্বের কোথাও ভালো নেই। সস্তায় সুলভে সব কিছু- এটা মনে করার কারণ নেই। সারা বিশ্বে বাজার পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ সময় বাজার সিন্ডিকেট নিয়ে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙবে। আসলে এর সঙ্গে কারা জড়িত এটা খতিয়ে দেখার বিষয় আছে। যারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে, ক্ষমতায় যেতে হাহাকার করছে, এই সিন্ডিকেট তাদের হতাশা থেকে হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকেও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি আওয়ামী লীগ সরকার, সে ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি নাকি ব্যর্থ? এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ব্যর্থও না, জিম্মিও না। দেশটা অনেকের চেয়ে ভালো চলছে। আজকে সারা বিশ্বে যে টালমাটাল অবস্থা। সারা বিশ্বে এই সমস্যা চলছে। বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয় যে আমরা আপনাদের খুব সুখে-শান্তিতে রাখতে পারব। অন্যরা ভালো নেই, আমরাও ভালো নেই। সবাই একযোগে ভালো থাকার চেষ্টা আন্তর্জাতিকভাবেও চলছে।
পরিবহনে চাঁদাবাজির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিবহনে চাঁদাবাজি অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। এটা নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে, সবাই কাজ করছে। এটা একেবারে বন্ধ হবে না, নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
দায়িত্বশীল নেতাদের দায়িত্ব নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকারের জন্য বিব্রতকর এমন কথা থেকে যারা দায়িত্বশীল নেতা তাদের উচিত বিরত থাকা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাজা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে- মার্কিন কংগ্রেসম্যানের এমন বক্তব্যের বিষয়ে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কারো দেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থায় তাদের নিজেদের দেশে কেউ যদি দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে যিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন, সেটাকে হয়রানি বলা কি সঠিক হবে? একজন ব্যক্তির জন্য দুটো দেশের সম্পর্ক প্রভাবিত হবে- এটা আমার মনে হয় সঠিক নয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।